জনপ্রিয় অনলাইন: সিলেটকে বলা হয় দ্বিতীয় লন্ডন। সিলেটী মানুষই
যুক্তরাজ্য তথা লন্ডনে বেশি বসবাস করায় এমনটি বলা হয়। বর্তমানে করোনার কারণে ভয়াবহ
পরিস্থিতির সম্মুখিন হয়েছে যুক্তরাজ্য। আর এই সময়ে সেখানে অবৈধভাবে বসবাসকারী সিলেটের
হাজার হাজার মানুষ আছেন চরম বিপাকে।
ভয়াবহ ব্রিটিশ সরকার করোনাভাইরাস মোকাবিলা ও সংক্রমণ রোধ করতে ২২ মার্চ থেকে দেশে লকডাউন জারি করেছে। এই আপদকালীন সময়ে দেশের জনগণের জন্য বড় অংকের তহবিলও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু দেশটিতে বসবাসরত হাজার হাজার সিলেটীসহ প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসীর ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ভয়াবহ ব্রিটিশ সরকার করোনাভাইরাস মোকাবিলা ও সংক্রমণ রোধ করতে ২২ মার্চ থেকে দেশে লকডাউন জারি করেছে। এই আপদকালীন সময়ে দেশের জনগণের জন্য বড় অংকের তহবিলও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু দেশটিতে বসবাসরত হাজার হাজার সিলেটীসহ প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসীর ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এই আপদকালীন সময়ে তাদের দৈনন্দিন জীবিকা নির্বাহের ব্যাপারেও নেয়নি কোনো পদক্ষেপ। এতে করে এসব অবৈধ অভিবাসীরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। অবৈধ অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবার অন্তর্ভুক্ত না থাকায় আছেন দুশ্চিন্তায়। আর কাজ করতে না পারায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন সেখানে অবস্থানরত বৈধতাহীন হাজার হাজার সিলেটী।
গত কয়েক বছর থেকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ প্রায় ৪০টি মানবাধিকার সংগঠন যুক্তরাজ্যর অবৈধ অভিবাসীদের নিয়মিত করার আহবান জানিয়ে আসলেও সরকার বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। সম্প্রতি সিলেটের বিশ্বনাথের কৃতিকন্যা ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী বিষয়টি পার্লামেন্টে উত্থাপন করেছেন। কিন্তু সরকার থেকে এ ব্যাপারে এখনও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
লন্ডনের ইমিগ্রেশন আইনজীবি ও কমিউনিটি নেতা সলিসিটর বিপ্লব কুমার পোদ্দার গণমাধ্যমকে বলেছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্রিটেনে বসবাসের কাগজপত্রবিহীন অবস্থায় যারা বসবাস করছেন তারা সীমাহীন শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। অবৈধ অভিবাসীদের বেশিরভাগই রেস্টুরেন্টে কাজ করেন। করোনাভাইরাসজনিত সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বেকার হয়ে পড়েছেন। রেস্টুরেন্টের পেছনে বা উপরের তলায় সাধারণত কর্মীরা থাকতেন। লকডাউনের কারণে অনেকে থাকার জায়গাটুকুও হারিয়েছেন।
বিপ্লব কুমার আরও বলেন, ধারণা করা হয় যুক্তরাজ্যে প্রায় লক্ষাধিক অবৈধ বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই বৃহত্তর সিলেটের বাসিন্দা। এদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ বাংলাদেশি মালিকানাধীন রেস্তোরাঁয় কাজ করে থাকেন। কিন্তু করোনা মোকাবিলায় সরকারের লকডাউন ঘোষণায় এসব শ্রমিকরা চাকরি হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এদের না আছে টাকা, না আছে থাকার জায়গা। আর করোনা পরিস্থিতির কারণে কোনো আত্মীয়-স্বজনের বাসায়ও গিয়ে উঠতে পারছেন না ।
যুক্তরাজ্যে রেস্টুরেন্ট শ্রমিক ও অভৈধ অভিবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পেইন চালানো ব্রিটিশ বাংলাদেশি আবু তাহের আজিজ গণমাধ্যমকে বলেন, বৈধ কাগজপত্রবিহীন অনেক বাংলাদেশি অভিবাসী রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন। এগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় থাকার শেষ আশ্রয়টুকু হারিয়ে এসব মানুষ এখন পথে পথে ঘুরছেন।
এদিকে, করোনা মহামারির কারণে ইউরোপের দেশ পর্তুগাল অবৈধ অভিবাসীদের চিকিৎসা সেবা ও জীবন যাপনের জন্য জনগনের সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু এই কঠিন সময়ে সে দেশের সরকার তো নয়ই, বরং যুক্তরাজ্যব্যাপী ছড়িয়ে থাকা হাজারখানেক কমিউনিটি সংগঠনের একটিও এই সময়ে এগিয়ে আসছে না এসব অবৈধ অভিবাসীদের সহযোগিতায়।
এই পরিস্থিতিতে সে দেশে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বৈধতাহীন হাজার হাজার সিলেটীও। আর তাদের এমন দুর্দিন আসায় চরম দুশ্চিন্তা আর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে দেশে থাকা তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং আত্মীয়-স্বজনদের।
সুত্র. বিয়ানীবাজার ভিউ২৪ ।
Post A Comment:
0 comments: