জনপ্রিয় অনলাইন : ভাষাসৈনিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী
লীগের ভেতরে জামায়াতের লোকও আছে। আওয়ামী লীগে কত রাজাকার আছে। বিপদের সময় এরা
ভয়ানকভাবে আসে। রাজাকারদের লিস্ট করার আগে এই রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করা উচিত।’
আজ রোববার বেলা একটার দিকে
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী এসব কথা বলেন। ‘সম্প্রীতি, বঙ্গবন্ধু
ও বাঙালির বিজয়’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে
সম্প্রীতি বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির
বক্তব্যে ভাষাসৈনিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ‘অনেক রাজাকার আছে, যাদের জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সম্মান দিয়েছিল। যেমন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী
ফারুক। তাঁকে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সেই ফারুককে পরে
ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এখনো রাজাকার আছে। অনেক রাজাকার আছে। এখনো আছে। এমনকি আমাদের
জননেত্রী শেখ হাসিনার আশপাশেও আছে। …তাদের নাম বললে আমার আর ঢাকায় আসা হবে না। তাই
আমি নাম বলতে চাই না। এই হচ্ছে অবস্থা।’
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, রাজাকারদের
তালিকা করলে দেখা যাবে, রাজাকাররাই সেই তালিকা তৈরি করছে।
ওই তালিকায় মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার, রাজাকাররা
মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাবে। কাদের মোল্লাকে শহীদ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এর আগেও ওই
পত্রিকা মোনায়েম খানকে শহীদ বলে আখ্যায়িত করেছে।
মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ‘বাকশালের সময় আওয়ামী লীগ
দাঁড়াতে পারেনি। কারণ, বাকশাল গঠনের তিন মাসের মাথায়
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলো। তাই বাকশাল ভালো-মন্দ যাচাইয়ের সুযোগ ছিল না। আমার
ধারণা, বাকশাল থাকলে আজকের বাংলাদেশের দুর্নীতি, সন্ত্রাস এত ব্যাপক হতো না। হয়তো এত চাকচিক্যময় রাস্তাঘাটও হতো না।’
বর্তমান রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব
প্রসঙ্গে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ‘আমার ধারণা, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখা না হলে বাংলাদেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে। এখানে মৌলবাদী নেতৃত্ব এসে যাবে। আওয়ামী লীগকে এ
ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে সম্প্রীতি
বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ
বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিচার এখনো শেষ হয়নি। এই হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
প্রয়োজন। এর জন্য আগামী এক বছর সম্প্রীতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গণস্বাক্ষর
কার্যক্রম চালানো হবে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন
সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্যসচিব মামুন আল মাহতাব। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে
তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হোসেন বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি বাংলাদেশে থাকবে।
কেউ বুদ্ধিজীবীদের নাম মুছে ফেলতে পারবে না। এই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে
কেউ মুছে দিতে পারবে না।
দৈনিক সংগ্রাম প্রসঙ্গে তথ্য
প্রতিমন্ত্রী বলেন,
‘একজন জল্লাদ, একজন আত্মস্বীকৃত
যুদ্ধাপরাধী, যার আদালতের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির রায়
হয়েছে, রায় কার্যকর হয়েছে, একটি
পত্রিকা তাকে শহীদ নামে উল্লেখ করেছে। এর বিচার শুরু হয়েছে। আমরা কেউ থেমে নেই। এই
পত্রিকার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা তথ্য মন্ত্রণালয়ের নেবে। এই দেশে এমন
ধৃষ্টতা আর কোনো দিন যাতে কেউ না নিতে পারে, সেই ব্যবস্থা
সরকার নেবে।’
একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে অনুষ্ঠানের শুরুতে এক মিনিট নীরবতা
পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান, বিচারপতি
শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাংবাদিক ও লেখক হারুন হাবিব,
সাবেক সচিব নাসিরউদ্দিন আহমেদ, শহীদ
বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে নুজহাত চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
Post A Comment:
0 comments: