জনপ্রিয়
অনলাইন :
স্পেনের বার্সেলোনায়
১৪ বছরের এক কন্যা শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় দেওয়া আদালতের রায়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে
পড়েছে। যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হলেও ধর্ষণের অভিযোগের প্রমাণ না মেলায় মামলার
আসামীরা অপেক্ষাকৃত কম মেয়াদের সাজা পেয়েছেন। আদালতের এই রায়ের প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
জানাচ্ছে সেখানকার মানুষ।
স্পেনের আইন অনুযায়ী কোনও যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে সহিংসতা
বা হুমকির ব্যবহার হলেই কেবল তা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হয়। সহিংসতা/হুমকির ব্যবহার না হলে
যৌন নিপীড়নের অপরাধে অপেক্ষাকৃত কম মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের এক ঘটনায় ১৪
বছরের মেয়ে শিশুকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ ব্যক্তিকে সম্প্রতি দশ থেকে ১২
বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগে এই মামলা করা হয়েছিল। সেই অভিযোগ প্রমাণিত
হলে তাদের ১৫ থেকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড হতে পারতো।
এই মামলায় যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত পাঁচ ব্যক্তি ২০১৬ সালের
অক্টোবরে কাতালোনিয়ার পূর্বাঞ্চলে একটি অব্যবহৃত কারখানায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শিশুটিকে
নিপীড়ন করে। আদালতে প্রসিকিউটররা জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে দুই স্পেনের, দুই জন কিউবার
আর অপরজন আর্জেন্টিনার। ওই অনুষ্ঠানে তারা অ্যালকোহলের প্রভাবের মধ্যে থাকা মেয়ে শিশুটির
ওপর আক্রমণ করে। আদালতের এক শুনানিতে ওই শিশুটি জানায়, ঘটনার খুব সামান্যই মনে করতে
পারে সে। তবে তাদের একজন একটি বন্দুক ব্যবহার করেছে। তবে অভিযুক্ত সবাই দায় অস্বীকার
করেছে।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ঘটনার শিকার ওই কন্যাশিশু নিজের
অবস্থা সম্পর্কে সচেতন ছিল না। সে কী করছিলো, তা বোঝার মতো অবস্থাও ছিল না তার। বেশিরভাগ
অভিযুক্তের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে সম্মতি দেওয়া কিংবা বিরোধিতা করার বাস্তবতা
ছিল না তার। অভিযুক্তদের পক্ষে তাই কোনও ধরনের সহিংসতা বা হুমকির ব্যবহার ছাড়াই যৌনসম্পর্ক
প্রতিষ্ঠা সম্ভব ছিল।
যৌন নিপীড়নের দায়ে পাঁচ অভিযুক্তকে কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি
ঘটনার শিকার শিশুকে ১২ হাজার ইউরো জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বার্সেলোনার মেয়র আডা কোলাও এই রায়ের সমালোচনা করে টুইট
বার্তায় একে ভয়ানক রায় আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিচারক নই আর আমি জানিও না তাদের
কত বছরের কারাদণ্ড হওয়া উচিত কিন্তু আমি জানি এটা নিপীড়ন নয়, ধর্ষণ।’ নারী অধিকার গ্রুপও
একই ধরণের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরাও এই রায় নিয়ে
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।
গত কয়েক বছরে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ আইনে পরিবর্তন এনে
সম্মতি ছাড়া যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ বলে গণ্য করতে শুরু করেছে। গত বছর সুইডেন আইন পরিবর্তন
করে আর ডেনমার্কও তা চালু করছে। একই ধরনের একটি আইনের খসড়া নিয়ে পর্যালোচনা চলছে স্পেনেও।
Post A Comment:
0 comments: