জাফার হোসাইন : কাতালোনিয়ার
স্বাধীনতাপন্থীদের নেতাদের কারাদণ্ডের প্রতিবাদে বার্সেলোনায় শুরু হওয়া বিক্ষোভ
পঞ্চম দিনেও অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের সাধারণ ধর্মঘটের কর্মসূচিতে
অচল হয়ে পড়ে কাতালোনিয়ার রাজধানী। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী শহরে প্রবেশ করে ট্রেন
থামিয়ে দেয় এবং রাজপথে অবরোধ করে।
২০১৭ সালে কাতালোনিয়ার
স্বাধীনতার দাবিতে গণভোট আয়োজনে ভূমিকার জন্য গত সোমবার (১৪ অক্টোবর) অঞ্চলটির ৯
স্বাধীনতাকামী নেতাকে কারাদণ্ড দেয় স্পেনের সুপ্রিম কোর্ট। আদেশে তাদের ৯ থেকে ১৩
বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতের রায়ের পরই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে
কাতালানরা। বার্সেলোনা ও সেখানকার কয়েকটি শহরে বিক্ষোভের সময় আহত হওয়া ৫২ জনকে
চিকিৎসা দেওয়ার কথা জানিয়েছে জরুরি সেবা বিভাগ। বুধবার চারজনকে অজামিনযোগ্য ধারায়
গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার বিক্ষোভকারীরা গাড়িতে
আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশের ওপর পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মারে। ব্রিটিশ বার্তা
সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে,
দিনভর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের পর রাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে
সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
শুক্রবার শেষ খবর পাওয়া
পর্যন্ত বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। শহরটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছাকাছি বড় ধরনের
বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। পরে পুরো কাতালোনিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ
বিক্ষোভে যোগ দেয়।
বিক্ষোভকারীরা অন্তত ২০টি
গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে। ফ্রান্সগামী প্রধান যান চলাচলের রাস্তাও বন্ধ করে দেয়
বিক্ষোভকারীরা। তারা রেলপথে অবস্থান নেয়।
শুক্রবার বার্সেলোনার অন্যতম
পর্যটন আকর্ষণ সাগ্রাদা ফ্যামিলি চার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা
গির্জাটির প্রবেশ মুখ বন্ধ করে দেওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, আঞ্চলিক
সরকারের নেতা কুইম তোরার পূর্বসূরি চার্লস পুজদেমন ২০১৭ সালে স্বাধীনতার দাবিতে
গণভোট আয়োজন করেন। স্পেনের শীর্ষ আদালতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ওই গণভোট আয়োজনের পর থেকে
ইউরোপীয় দেশগুলোসহ অন্যরা সেখানকার আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করছে। এরই মধ্যে চার
হাজারেরও বেশি কোম্পানি কাতালোনিয়ার বাইরে তাদের সদর দফতর সরিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে
রয়েছে কাতালান ব্যাংক কাইক্সা ব্যাংক ও ব্যাংকো সাবাডেল। দেশটির ভারপ্রাপ্ত
অর্থনীতিমন্ত্রী নাদিয়া কালভিনো বলেছেন, কাতালোনিয়া’র স্বাধীনতা দাবির প্রভাব না থাকলে দেশের অর্থনীতির গতি আরও দ্রুত হতে
পারতো।
Post A Comment:
0 comments: