লায়েবুর
রহমানঃ ঈদকে ঘিরে স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের
প্রস্তুতি লায়েবুর রহমান ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও ঈদের
প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। ঈদের কেনাকাটাতো আছেই; পাশাপাশি দেশে স্বজনরা যাতে ঈদের
আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সেজন্য দেশে অর্থও প্রেরণ করছেন তারা।
স্পেনের প্রধান দু‘টি
শহর মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায় মানিট্রান্সফার দোকানগুলোতে প্রবাসীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
দেশিয় আমেজে প্রবাসেও ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার চেষ্টা করলেও তাদের মন পড়ে আছে বাংলাদেশের
স্বজনদের নিয়ে। মাদ্রিদে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ‘ভূঁইয়া মানি ট্রান্সফার’, ‘বাংলা বাজার
মানিট্রান্সফার’, ‘আমানাহ মানি ট্রান্সফার’, ‘নূর জাহান মানি ট্রান্সফার’ এবং বার্সেলোনার
‘ডট মিডিয়া’, ‘ভিক্টোরিয়া মানি ট্রান্সফার’, ‘শাপলা মানি ট্রান্সফার’, ‘এশিয়া মানি
ট্রান্সফার’ দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে দেশে অর্থ পাঠাতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের
ভিড়। দোকানগুলোর স্বত্ত্বাধিকারীরা জানালেন,
প্রতিবছর দুই ঈদেই প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স পাঠান। তাই এবারের ঈদেও বরাবরের
মতো তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। মাদ্রিদের একটি মানিট্রান্সফার দোকানে দেশে অর্থ পাঠাতে
আসা হুমায়ূন কবির রিগ্যান বলেন, প্রবাসে দেশের মতো ঈদের আমেজ নেই। দেশে বাবা মা, আত্মীয়
স্বজনদের জন্য ঈদের জামা কাপড় কেনার টাকা পাঠাতে এসেছি। দেশের স্বজনদের মুখে ঈদের হাসি ফুটাতে পারলেই আমাদের
তৃপ্তি। নিজেদের বাচ্চার জন্য ঈদের জামা কিনেছেন
নাজমুল ইসলাম নাজু ও আফরোজা ইসলাম দম্পতি। তারা জানালেন, আমাদের নতুন জামা কেনার শখ
সেই কবে শেষ হয়েছে! দেশের মতো তো এখানে আর ঈদ উদযাপন করা যায় না। বাচ্চার জন্য কেবল জামা কিনে আনলাম। আমাদের ছোট বেলার
ঈদের আনন্দ খুঁজবো ওর মাঝে। মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায়
বাংলাদেশি গ্রোসারি দোকানগুলোতে ঈদের জন্য বাঙালিয়ানা নানা উপকরণ মজুত করে রেখেছেন
দোকানের মালিকরা। ঈদের দিন নানা মুখরোচক খাবার
তৈরীর জন্য সদাই কেনা শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। দোকানীরা জানালেন- সেমাইর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে চটপটি, পিঠার উপকরণও বিক্রি হচ্ছে। বার্সেলোনায় বাংলাদেশি পোষাকের দোকানগুলোতে শেষ সময়ের
কেনা কাটার ভিড় লক্ষ্য গেছে। ‘টেক এন পে’ দোকানের স্বত্ত্বাধিকারী সফিউল আলম সফি বললেন,
এবারের ঈদকে ঘিরে শিশু কিশোর, পুরুষ-মহিলাদের জন্য পণ্যসামগ্রী মজুত করে রেখেছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও ভিড় জমাচ্ছেন দোকানে। বাংলাদেশি
পন্য ক্রয় করতে পেরে প্রবাসীরাও খুশি। ‘লেবাসুত ত্বাকওয়া’ নামের দোকানের স্বত্ত্বাধিকারী
রুহুল আমিন জানালেন- পুরুষদের পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে বেশি। তাছাড়া মহিলাদের দেশিয় সংস্কৃতির আদলে শাড়ি, থ্রিপিসসহ
নানা আইটেমেরও কাটতি আছে। স্পেনে ঈদের দিন সরকারী ছুটি না থাকায় ঈদের দিনও কাজে ছুটতে
হবে অনেককেই। বাংলাদেশি মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান; বিশেষ করে রেস্তোরাঁয় কর্মকরত
বাংলাদেশিদের অন্যান্য দিনের মতো ঈদের দিনও কাজ করতে হবে বলে জানা গেছে। স্পেনের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় স্থাপিত মসজিদগুলোর
তত্ত্বাবধানে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। রাজধানী শহর মাদ্রিদে প্রতি বছর বাঙালি
অধ্যুষিত এলাকা লাভাপিয়েস সংলগ্ন কাসিনো পার্কে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও এবছর ‘রেইনা
সোফিয়া মিউজিয়াম’ সংলগ্ন ময়দানে স্থানীয় স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষ ঈদের নামাজ আদায়ের অনুমতি
দিয়েছেন- জানালেন মাদ্রিদ বায়তুল মুকাররম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি খোরশেদ
আলম মজুমদার। পর্যটন নগরী বার্সেলোনায় বাঙালি
অধ্যুষিত রাভাল সংলগ্ন শাহ জালাল জামে মসজিদ, লতিফিয়া ফুলতলী জামে মসজিদ ও দারুল আমাল জামে মসজিদ পরিচালনা
কমিটির উদ্যোগেও ঈদের বেশ কয়েকটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Post A Comment:
0 comments: