জনপ্রিয় অনলাইন : আগামী মাসে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন
(ইসি)। নিবন্ধনের জন্য ৭৬টি নতুন দল আবেদন করলেও মাত্র ৪-৫টি দলের নাম আলোচনায়
রয়েছে। এক্ষেত্রে যেসব রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড দৃশ্যমান রয়েছে এবং নিয়মিত সভা,
সমাবেশ করছে শুরুতে তাদের নিবন্ধন দিতে চায় নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে দেশের
প্রধান দুই জোটের শরিক দু-একটি দলও নিবন্ধনের বিবেচনায় রয়েছে। এ জন্য বিভিন্ন
গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমেও কয়েকটি দলের খবর নিচ্ছে ইসি।
একাদশ সংসদ নির্বাচন
সামনে রেখে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে ৭৬টি নতুন রাজনৈতিক দল। এর
মধ্যে বেশির ভাগ দলই অপরিচিত, নামসর্বস্ব। সেই সঙ্গে রয়েছে নানা বাহারি নামের দলও।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ৭৬টির মধ্যে অনেক দলই সাইনবোর্ডসর্বস্ব। অনেক দলের অফিস
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এবারে হাতে গোনা কয়েকটি দল নিবন্ধন পেতে পারে বলে মনে
করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, দশম
সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগ্রহী নতুন ৪৩টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন করেছিল।
এর মধ্যে ৪১টিই নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদের ‘যোগ্যতার’ প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়। মাত্র দুটি দল শর্ত অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে কার্যালয় ও
কমিটি থাকার তথ্য দিয়েছিল। এরপর তাদের নিবন্ধন দেয় কমিশন। একইভাবে নবম সংসদ
নির্বাচনের জন্য ২টি দলকে নিবন্ধন দেয় ইসি।
২০০৮ সালে নবম জাতীয়
সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রথা চালু করে প্রথমে ৩৮ দলকে নিবন্ধন
দেওয়া হয়। এর মধ্যে পরে দুই দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় বর্তমানে নিবন্ধিত দলের
সংখ্যা ৪০টি। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নামসর্বস্ব দলকে নিবন্ধন দিতে চায় না কমিশন।
আগামী সংসদ নির্বাচন
সামনে রেখে সাইনবোর্ডসর্বস্ব রাজনৈতিক দলই বেশি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। অনেক
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় নেই। কোনো রাজনৈতিক দল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বাসা,
আবাসিক ভবন, মুদির দোকানেও কেন্দ্রীয় কার্যালয় দেখিয়েছে। একই ভবনে দেখানো হয়েছে
কয়েকটি রাজনৈতিক দলের অফিসও। আবার নতুন করে কেন্দ্রীয় অফিসের নামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে
রেখেছে অনেকেই।
সূত্র জানিয়েছে, নতুন
দলের আবেদন যাচাই-বাছাই করছেন কর্মকর্তারা। এমনকি অফিসের খোঁজখবরও নিচ্ছেন তারা।
নতুন দলের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী মাঠের অফিসের খবরও নেওয়া হচ্ছে। ইসি বলছে,
নিবন্ধনের শর্ত কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করে নতুন দলের নিবন্ধন দেওয়া হবে। এর আগে
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দিতে গত ৩০ অক্টোবর আবেদন আহ্বান করে নির্বাচন কমিশন
(ইসি)।
৩১ ডিসেম্বর আবেদন
জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ইসিতে নানা বাহারি নামের দল রয়েছে আবেদনের তালিকায়। সেগুলো হচ্ছে— নাকফুল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নিউ সংসদ লীগ, ঘুষ নির্মূল পার্টি, মঙ্গল
পার্টি, কর্মসংস্থান আন্দোলন, সোনার বাংলা উন্নয়ন লীগ, সত্যব্রত আন্দোলন, সততা দল,
জাতীয় পরিবার কল্যাণ পার্টি, শান্তির দল, জনতার কথা বলে, মৌলিক বাংলা, জনস্বার্থে
বাংলাদেশ, আলোকিত পার্টি ইত্যাদি। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ‘নাকফুল বাংলাদেশ’ নামের দলের আবেদনে অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়
হিসেবে দেখানো হয়েছে রাজধানীর উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের বিএনএস সেন্টারের দশম তলা।
কিন্তু সেখানে কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যালয় নেই। রাজনৈতিক কোনো কার্যক্রমও সেখানে
পরিচালিত হয় না। যে কক্ষটিকে দলীয় কার্যালয় হিসেবে দেখানো হয়েছে, সেটি একটি
গার্মেন্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অথচ এটিকেই রাজনৈতিক দলের অস্থায়ী কার্যালয় দেখিয়ে
নিবন্ধন চেয়েছে ‘নাকফুল বাংলাদেশ’।
কর্মকর্তারা বলেন, রাজধানীর তোপখানা রোডের
বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ ভবন যেন রাজনৈতিক দলগুলোর জন্মস্থান। ২২/১ তোপখানা রোডে
অবস্থিত ওই ভবনে ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে এমন চারটি রাজনৈতিক দলের
কার্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ মঙ্গল পার্টির অফিসও সেখানে। এ ছাড়া বাংলাদেশ
কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ
জাসদ)-এর অফিসও একই ভবনে।
Post A Comment:
0 comments: