জনপ্রিয় অনলাইন : তিব্বতি ধর্মীয়
নেতা দালাই লামার অরুণাচল সফরকে কেন্দ্র করে ক্রমশ সুর চড়াচ্ছে চীন। দালাই লামাকে ব্যবহার
করে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নষ্ট করছে ভারত, অভিযোগ তুলেছিল চীন। এবার বৃহস্পতিবার সরাসরি
ভারতীয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর নাম উল্লেখ করে তাকে মৌখিকভাবে
আক্রমণ করল চীনা সংবাদপত্র।
চীনা সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়তে প্রকাশিত হয়েছে, “রিজিজু নিজেকে খুব চালাক মনে করতে
পারেন। বেইজিংয়ের কূটনৈতিক অবস্থানকে অনুকরণ করতে পারেন রিজিজু, কিন্তু তাকে বুঝতে
হবে তাইওয়ানের মতো তিব্বতও চীনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।” সংবাদপত্রটির দাবি, দালাই লামাকে কূটনৈতিক অস্ত্র হিসাবে
ব্যবহার করছে নয়াদিল্লি।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, দালাই লামাকে অরুণাচলে
ঢুকতে দেয়ায় পাল্টা কাশ্মিরের পরিস্থিতি আরো ঘোরাল করে তোলার হুমকি দিয়েছে চীনা সরকার।
চাইলেই কাশ্মির ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করতে পারে চীন, দাবি সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমের।
এমনকী, গ্লোবাল টাইমসে তো এও বলা হয়েছে, “ভারতের চেয়ে চীনের জিডিপি ঢের বেশি। সেনাবহরেও ভারতের চেয়ে
বহুগুণ শক্তিশালী চীন। চোখের পলক ফেলার আগে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত পৌঁছে যাবে চীনা মিলিটারি।
আর ভারতের প্রতিবেশীরা চীনের ভালো বন্ধু। যুদ্ধ বাধলে বেইজিং কি নয়াদিল্লির কাছে হেরে
যাবে বলে মনে হয়?”
ভারতের কাছে কূটনৈতিক স্তরে প্রতিবাদ দাখিল করে প্রতিবেশী
দেশটির দাবি, দালাই লামাকে অরুণাচলে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রভাবিত
করেছে ভারত৷ এদিকে, তার অরুণাচল সফর নিয়ে পরিস্থিতি ভারত-চিন পারস্পরিক বাদানুবাদ এমন
জায়গায় পৌঁছেছে যে, আর নীরব থাকতে পারেননি তিব্বতি ধর্মগুরু৷ বুধবার তিনি বলেই ফেলেন,
ভারত তাকে কখনও চীনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেনি৷
মঙ্গলবারই অরুণাচলের বমডিলায় পৌঁছেছেন দালাই লামা৷ তার অরুণাচল
সফর নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই একের পর এক হুমকি দিয়েছে চীন৷ অবশেষে গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একপ্রকার কড়া বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয়া
হয়, তিব্বতি ধর্মগুরুর অরুণাচলে যাওয়া ধর্মীয় সফর৷ ভারত এই বিষয়ে কোনো বিতর্ক চায় না৷
চীনের হুমকি ছিল ‘ফল ভালো হবে না’৷ জবাবে ভারত জানায়, এই ধরনের মন্তব্য তারা ভালভাবে দেখছে
না৷ এরপরেই সুর চড়িয়েছে চীনও৷ বেইজিং সরাসরিই দলাই লামার অরুণাচল সফর বাতিল করার দাবি
তুলেছে৷ সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইয়াং সাংবাদিকদের বলেন, “বিতর্কিত অরুণাচলে দালাই লামাকে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে ভারত
জেদ দেখিয়েছে৷ ঝুঁকি নিয়েছে ভারত৷ এর জেরে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব পড়বে৷” এই ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপের কথাও বলেছেন চুনইয়াং৷
চীন পাল্টা সুর চড়ালেও ভারত যে নিজেদের অবস্থান থেকে একচুল
সরছে না, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সে বার্তাও স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে৷ পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গোপাল বাগলে নয়াদিল্লির মঙ্গলবারের বিবৃতি উল্লেখ করে বলেছেন,
ভারত ওই নীতিতেই অনড়৷ তিনি বুধবারও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, দালাই লামার সফর পুরোপুরি
ধর্মীয়৷ তিনি আগেও বহুবার অরুণাচলে গিয়েছেন৷ তাই এ বিষয়ে রাজনীতির রং চড়ানো হোক বা
কৃত্রিম বিতর্ক তৈরি হোক, তা ভারত চায় না৷
Post A Comment:
0 comments: