সুফিয়ান আহমদ, বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি : আগামী ২৫ শে এপ্রিল
মঙ্গলবার দীর্ঘ ১৬ বৎসর পর অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে বিয়ানীবাজার পৌরসভার প্রথম নির্বাচন।
বহুল প্রত্যাশীত এ নির্বাচনে ইতোমধ্যে "মেয়র" পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ মনোনয়ন
পেয়েছেন আব্দুশ শুক্কুর।
তিনি মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন তার নেতাকর্মী
ও সমর্থকেরা। তারা তাকে নিয়ে চালাচ্ছেন জোর প্রচার প্রচারণাও। পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক
এ সাধারণ সম্পাদক আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও ব্যক্তি হিসেবে সব দলের
কাছেই রয়েছে তার আলাদা ইমেজ। দলীয় নেতাকর্মীদের কাছেও তিনি সমাদৃত। বিয়ানীবাজার পৌরসভার
বহুল প্রতীক্ষিত নির্বাচনে তিনিই হবেন "প্রথম মেয়র" এমনটাই তার সমর্থকদের
বিশ্বাস।এদিকে আওয়ামীলীগ থেকে আব্দুশ শুক্কুর মনোনীত হওয়ার পরই প্রকাশ্যে এলেন রাজপথের
বিরোধী দল বিএনপি'র প্রার্থী আবু নাসের পিন্টু। তিনি পৌর বিএনপি'র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব
পালনের পাশাপাশি দীর্ঘদিন থেকে পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য কৌশলী প্রচার
প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। যার ফলে ইতোমধ্যে তিনিও চলে এসেছেন আলোচনায়। ধানের শীষ প্রতিক
নিয়ে তিনি লড়বেন "মেয়র" পদে। ধারণা
করা হচ্ছে, নির্বাচনে মূল লড়াই হতে পারে শুক্কুর ও পিন্টুর মধ্যে। তাছাড়া ক্ষমতাসীন
দলের শরীক জাসদও (ইনু) প্রার্থী দিচ্ছে এই নির্বাচনে। জাসদের একমাত্র মনোনয়ন প্রত্যাশী
হিসেবে মাঠে আছেন উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক শমসের আলম। ভোটের হিসেবে উপজেলায় জাসদ
ভালো অবস্থানে না থাকলেও নিজেদের অবস্থান জানান দিতে নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করছে
বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনী মাঠে থাকবেন না কি ক্ষমতাসীন
দলের প্রার্থীকে সমর্থন দিবেন তা দেখার অপেক্ষায় ভোটাররা। অপরদিকে নিজেদের ভোটের অবস্থান
জানান দিতে জামায়াতে ইসলামীও এই নির্বাচনে তাদের প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইতোমধ্যে তারা দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ করলেও তা এখনো প্রকাশ করে নি। ধারণা করা হচ্ছে,
পৌর জামায়াত নেতা মোঃ জাকির হোসেন অথবা ডাঃ মাহবুবুল আলম সোজাকে দেখা যেতে পারে জামায়াতের
প্রার্থী হিসেবে।
অন্যদিকে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাসদের "মেয়র" প্রার্থী
নির্ধারণ হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। তারাও "মেয়র" প্রার্থী
দেয়ার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন। তৎপর রয়েছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতিক প্রত্যাশী আব্দুন
নুর ও সাহেদ আহমদ। ইতোমধ্যে আব্দুন নুর যুক্তরাষ্ট্র ও সাহেদ আহমদ যুক্তরাজ্য থেকে
দেশে এসে পৌছেছেন। আব্দুন নুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি ও সাহেদ আহমদ উপজেলা
জাতীয় পার্টির একাংশের আহবায়ক। শেষ পর্যন্ত এই দু'জনের মধ্যে কে হন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল
প্রতিকের "মেয়র" প্রার্থী তা এবার দেখার পালা।
প্রসঙ্গত, সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ এপ্রিল
মঙ্গলবার অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশীত বিয়ানীবাজার পৌরসভার নির্বাচন। নির্বাচন
উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাউন্ট ডাউন শুরু করে দিয়েছেন প্রার্থীরা। যে যার মত চালাচ্ছেন
প্রচার-প্রচারণা। তবে নতুন কোন আইনী জটিলতা সৃষ্টি না হলে এই দিনই অনুষ্টিত হবে নির্বাচন।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্থানীয় নির্বাচন
কমিশন অফিসে প্রেরণ করেছে। নির্বাচন কমিশনের চিঠি পেয়ে নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে
স্থানীয় নির্বাচন অফিসও। আগামী ২৫ এপ্রিল উপলক্ষ্যে ২৭ মার্চ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, ২৯
মার্চ বাছাই ও ৫ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। তফশীল অনুযায়ী
অফিস চলাকালীন সময়ে স্থানীয় নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে। নির্বাচনে
রিটার্ণিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনির হোসেন আর সহকারী
রিটার্ণিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন উপজেলা নির্বাচন সৈয়দ মো: কামাল হোসেন।
Post A Comment:
0 comments: