জনপ্রিয় অনলাইন : বিনম্র শ্রদ্ধা
ও ভালোবাসায় জাতি স্মরণ করেছে স্বাধীন বাংলার স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানকে।
গতকাল ছিল ইতিহাসের এই মহানায়কের ৯৮তম জন্মদিন। একই সঙ্গে দিবসটি দেশব্যাপী
জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। এ উপলক্ষে গতকাল দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি
পালন ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গতকাল সকাল ৭টায় রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু
ভবনের সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি
ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শ্রদ্ধা জাননোর পর প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে
দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে দলের সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
ওবায়দুল কাদেরসহ দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোজাফ্ফর
হোসেন পল্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, আব্দুল মান্নান,
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, আওয়ামী লীগের
সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম
কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ,
দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এরপর বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স
পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ/একাংশ) সাধারণ সম্পাদক
শিরিন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের দপ্তর
সমন্বয়ক মৃণাল কান্তি দাস ১৪ দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে
শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক
বাংলাদেশ গঠনের যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, তার বাস্তবায়নই এখন আওয়ামী লীগের মূল
শপথ। ‘সরকার জঙ্গিবাদ নিয়ে
রাজনীতি করতে চায়’ বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি
বলেন, সরকার জঙ্গিবাদ দমনে কাজ করায় বিএনপির অন্তর্জ্বালা হচ্ছে। বিএনপিই জঙ্গিবাদ
নিয়ে রাজনীতি করছে, তাদের মদদ দিচ্ছে।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল ভোর থেকে বঙ্গবন্ধু ভবনে নানা বয়সী ও শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে। ভোর ৬টা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে এসে জড়ো হতে থাকেন। উপস্থিত হাজার হাজার নারী-পুরুষের কণ্ঠে তখন উচ্চারিত হয় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান। মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, যুবলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এদিকে জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে সারা দেশে কুরআনখানি ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে সারা দেশের মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনা করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গতকাল সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে কুরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মিলাদ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা আইয়ুব খান। মোনাজাতে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের শহীদ সদস্যের রুহের মাগফিরাত কামনা করে প্রার্থনা করা হয়। একই সঙ্গে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এদিকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আজ বেলা তিনটায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। এতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন।
দেশে ভিক্ষুক, টোকাই ও পথশিশু থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী
আসাদুজ্জামান বাবুল, গোপালগঞ্জ থেকে জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্ম দিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। প্রথমে প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকষ দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এরপর জাতির জনকের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত করেন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসোৗধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফারুক খান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মহিলা শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিকাল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত শিশু সমাবেশ, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে শিশুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশুদের ভালোভাবে লেখাপড়া করে বড় হয়ে এ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে চাই। এজন্য আমরা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি। কেউ যেন ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়ে না পড়ে। একটি শিশুও রাস্তায় ঘুরবে না, তারা স্কুলে যাবে পড়াশোনা করবে। পড়াশোনার সুযোগ আমরা করে দিচ্ছি। শুধু তাই নয়, পথশিশু বলে কোনো শিশু থাকবে না, টোকাই বলে কোনো শিশু থাকবে না। শিশুদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হলে তোমাদের মনোযোগ সহকারে লেখাপড়া করতে হবে। মনদিয়ে লেখাপড়া করলে একদিন তোমরাই পারবে জাতির জনকের স্বপ্ন পূরণ করতে। তিনি প্রতিটি শিশুর বাবা-মাকে তাদের দিকে নজর দেয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্য সব অভিভাবককে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা আরও বলেন, শিশুদের বিদ্যালয়গামী করার জন্য বিনা বেতন, বিনামূল্যে বই বিতরণ, উপবৃত্তি ও স্কুলের টিফিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৯৭৪ সালে জাতির জনক শিশু অধিকার আইন প্রণয়ন করেন; এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ২০১১ সাল থেকে শিশু অধিকার আইন চালু করেছে। বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন দেশের সব শিশুকে লেখাপড়া শিখিয়ে আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করতে। কিন্তু তিনি পারেননি। গরিব, অসহায় ও প্রতিবন্ধী শিশুদের অবহেলার চোখে না দেখে তাদের প্রতি আন্তরিক হওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল ভোর থেকে বঙ্গবন্ধু ভবনে নানা বয়সী ও শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে। ভোর ৬টা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে এসে জড়ো হতে থাকেন। উপস্থিত হাজার হাজার নারী-পুরুষের কণ্ঠে তখন উচ্চারিত হয় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান। মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, যুবলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এদিকে জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে সারা দেশে কুরআনখানি ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে সারা দেশের মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনা করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গতকাল সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে কুরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মিলাদ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা আইয়ুব খান। মোনাজাতে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের শহীদ সদস্যের রুহের মাগফিরাত কামনা করে প্রার্থনা করা হয়। একই সঙ্গে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এদিকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আজ বেলা তিনটায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। এতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন।
দেশে ভিক্ষুক, টোকাই ও পথশিশু থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী
আসাদুজ্জামান বাবুল, গোপালগঞ্জ থেকে জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্ম দিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। প্রথমে প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকষ দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এরপর জাতির জনকের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত করেন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসোৗধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফারুক খান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মহিলা শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিকাল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত শিশু সমাবেশ, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে শিশুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশুদের ভালোভাবে লেখাপড়া করে বড় হয়ে এ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে চাই। এজন্য আমরা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি। কেউ যেন ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়ে না পড়ে। একটি শিশুও রাস্তায় ঘুরবে না, তারা স্কুলে যাবে পড়াশোনা করবে। পড়াশোনার সুযোগ আমরা করে দিচ্ছি। শুধু তাই নয়, পথশিশু বলে কোনো শিশু থাকবে না, টোকাই বলে কোনো শিশু থাকবে না। শিশুদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হলে তোমাদের মনোযোগ সহকারে লেখাপড়া করতে হবে। মনদিয়ে লেখাপড়া করলে একদিন তোমরাই পারবে জাতির জনকের স্বপ্ন পূরণ করতে। তিনি প্রতিটি শিশুর বাবা-মাকে তাদের দিকে নজর দেয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্য সব অভিভাবককে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা আরও বলেন, শিশুদের বিদ্যালয়গামী করার জন্য বিনা বেতন, বিনামূল্যে বই বিতরণ, উপবৃত্তি ও স্কুলের টিফিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৯৭৪ সালে জাতির জনক শিশু অধিকার আইন প্রণয়ন করেন; এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ২০১১ সাল থেকে শিশু অধিকার আইন চালু করেছে। বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন দেশের সব শিশুকে লেখাপড়া শিখিয়ে আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করতে। কিন্তু তিনি পারেননি। গরিব, অসহায় ও প্রতিবন্ধী শিশুদের অবহেলার চোখে না দেখে তাদের প্রতি আন্তরিক হওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
Post A Comment:
0 comments: