সুফিয়ান
আহমদ, বিয়ানীবাজার প্রতিনিধিঃ বিয়ানীবাজারের ঘুঙ্গাদিয়া-বড়দেশ
বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী রেহানা আক্তার ইভা (১৫) যথাসময়ে
চিকিৎসা না পেয়ে নিজ বিদ্যালয়েই করুণ মৃত্যুবরণ করেছে। ইভার এমন মৃত্যুতে শোকের
ছায়া নেমে এসেছে তাঁর পরিবার, সহপাঠিসহ গোটা এলাকায়। রহস্যজনক এমন মৃত্যুতে এলাকাবাসী কেউ
মুখ না খুললেও ইভার পরিবার দায়ী করছেন শিক্ষকদের। তারা বলছেন, শিক্ষকরা
যদি খেলায় মগ্ন না হয়ে ইভাকে যথাসময়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতেন, তাহলে
ইভার এমন মৃত্যু হত না।
প্রাপ্ত
তথ্য মতে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার
মুড়িয়া ইউনিয়নের ঘুঙ্গাদিয়া ফুলআলা গ্রামের ফখর উদ্দিনের কনিষ্ট মেয়ে ও ঘুঙ্গাদিয়া
বড়দেশ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী রেহানা আক্তার ইভা প্রতিদিনের মত
সোমবারেও নিজ বিদ্যালয়ে যায়। বিদ্যালয়ে গত কয়েকদিন ধরে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা
থাকায় সহপাঠিদের সাথে বসে গল্পগুজব করছিলো সে। দুপুরের দিকে ইভা বিজ্ঞানাগারের
দিকে যায়। যদিও সে দিকে জি¦ন-ভুতের ভয়ে কেউ যান না। সেখান থেকে আসার কিছু সময় পর ইভা মাথায় ব্যাথা অনুভব
করছে বলে তাঁর সহপাঠিদের জানায়। আস্তে আস্তে তার শরীর খারাপ হতে থাকে। একপর্যায়ে
ইভা শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুনকে অসুস্থতার কথা বললে তিনি ছুটি দেন নি। এরপর তার
অবস্থা আরো অবনতির দিকে যেতে থাকে। বিকেল ৩টার দিকে ইভার মাথাব্যাথা অসহনীয়
পর্যায়ে চলে গেলে সে মাথা ঘুরে পড়ে যায় এবং তার মুখ দিয়ে ফেনা আসতে থাকে। ইভা পড়ে
যাওয়ার পর খেলায় মগ্ন শিক্ষকদের তাঁর সহপাঠিরা জানালে শিক্ষকরা এসে ইভার বাড়িতে
ফোন দেন। ফোন পেয়ে ইভার বড় ভাই আলী আহমদ বিদ্যালয়ে এসে ইভাকে বিয়ানীবাজার উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ফাতেমা
খানম ও ডাঃ রাবিয়া বেগম ইভাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর লাশ বাড়িতে নিয়ে এসে রাতেই ইভাকে
পারিবারিক গোরস্থানে সমাহিত করা হয়।
ইভার
সহপাঠি শামীমা আক্তার শাম্মী ও ফাহমিদা ইয়াসমীন জানায়, “প্রতিদিনের মত সোমবার বিদ্যালয়ে গিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা থাকায় আমরা
ক্লাসে বসে গল্প করছিলাম। দুপুরের দিকে গল্পের মধ্য থেকে উঠে ইভা বিজ্ঞানাগারের
দিকে যায়। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, সেই জায়গায় কোন শিক্ষার্থী যান না জি¦ন-ভুতের
ভয়ে। সেখান থেকে আসার কিছু সময় পর ইভা মাথায় খুব ব্যাথা করছে বলে জানায়। এরপর তারা
তাকে সুস্থ করার জন্য চেষ্টা করলেও কোনভাবে কাজ হয়নি। বরং তার মাথার ব্যাথা আরো
বাড়তে থাকে। সময় যত গড়ায় ইভা আরো নিস্তেজ হতে থাকে। বিকেল আনুমানিক ৩টার দিকে ইভা
দ্বিতীয়বারের মত পড়ে গেলে ,
তার মুখ দিয়ে ফেনা আসতে থাকে। ইভার মুখ দিয়ে ফেনা আসার
খবর তারা শিক্ষক আব্দুল হামিদকে
জানান-এরপর তারা আর কিছুই বলতে পারে নি।
Post A Comment:
0 comments: