সুফিয়ান আহমদ, বিয়ানীবাজার
প্রতিনিধিঃ বিয়ানীবাজারের দাসউরা দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজিম
উদ্দিনের দাঁপটে অসহায় হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।
জামায়াত সমর্থিত এ শিক্ষক মানছেন না
সরকারী কোন নিয়ম নীতি। নিজের ইচ্ছা মত প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য সম্পূর্ণ
মনগড়াভাবে বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তি
সংশোধনের জন্য এবং সরকারী বিধি বিধান মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রদানের
নির্দেশ দিলেও তা মানছেন না তিনি। এলাকার কিছু জামায়াত নেতাদের ছত্রছায়ায় তাঁর এই
দাঁপুটে মনোভাবের কারণে নষ্ট হচ্ছে বিদ্যালয়ের সুনাম ও শিক্ষার সুষ্টু পরিবেশ।
এলাকায় বিরাজ করছে মৃদু উত্তেজনা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের এমন কাজ কারবারে
হতাশ মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষকবৃন্দসহ সচেতন এলাকাবাসী। তারা
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের এহেন কারবারে সরকারের সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করে
দাঁপুটে এই প্রধান শিক্ষককে এই বিদ্যালয় থেকেও সরিয়ে দেয়ার দাবী তুলেছেন।
এদিকে গতকাল বুধবার প্রধান
শিক্ষক নিয়োগের জন্য এবং পত্রিকায় সরকারী বিধি বিধান না মেনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান
শিক্ষকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে আলোচনার জন্য বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভা
আহবান করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এলাকার প্রবীণ মুরুব্বী ও শিক্ষানুরাগী হাজী
সজ্জাদুর রহমান। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের গুটি কয়েক সমর্থকের কারণে তা পন্ড হয়ে যায় সভা। এরপর থেকে এলাকায় মৃদু
উত্তেজনা বিরাজ করতেছে।
প্রাপ্ত সূত্র মতে জানা যায়, গত ২০
নভেম্বর উপজেলার তিলপারা ইউনিয়নের দাসউরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজির
উদ্দিন আনসার অবসর গ্রহণ করেন। এরপর ২৭ নভেম্বর কয়েকটি পত্রিকায় নূন্যতম ৫ বৎসরের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে
প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিন।
যদিও শিক্ষক নিয়োগের সরকারী পরিপত্রে শিক্ষকতা পেশায় ১২ বৎসরের অভিজ্ঞতার কথা
উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের এমন বিজ্ঞপ্তিতে টনক নড়ে
বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টসহ প্রশাসনের। এরপর শিক্ষক নিয়োগের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের
জন্য উপজেলা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দাসউরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত
প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিনকে নির্দেশ দেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে নাজিম উদ্দিন ও
দু’জন সদস্য সরকারের
নির্দেশ না মেনে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি আর প্রকাশ করেন নি। আর একারণেই গতকাল বুধবার
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভা আহবান করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। এসময় সভাপতি
শিক্ষক নিয়োগের পরিপত্র অনুযায়ী পুণরায় সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আহ্বান জানালে
নাজিম উদ্দিন ও কমিটির দু’সদস্য সভাপতির নির্দেশও অগ্রাহ্য করেন। অথচ বেশিরভাগ সদস্য সভাপতির
কথায় একমত পোষণ করলেও নাজিম উদ্দিন ও বাকী দু’ সদস্যের কারণে কোন সিদ্ধান্ত নিতে
পারেন নি তারা। এরপর হট্টগোল শুরু হলে পন্ড হয়ে যায় সভা। এঘটনার পর থেকে এলাকায়
মৃদু উত্তেজনাও বিরাজ করছে।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান
শিক্ষক নাজিম উদ্দিনের এমন কাজকারবার ও এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য হতাশ মুক্তিযোদ্ধের
চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষকবৃন্দসহ সচেতন এলাকাবাসী। তারা জামায়াত সমর্থক এ শিক্ষকের
এহেন কারবারে সরকারের সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করে দাঁপুটে এই শিক্ষককে এই
বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে দেয়ার দাবী তুলেছেন।
ইাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বলেন, আমাদের
বিদ্যালয়টি ঐতিহ্যবাহী একটি বিদ্যাপীট। আমাদের এলাকার যেমন ঐতিহ্য রয়েছে, তেমনি বিদ্যালয়ের সুনাম রয়েছে। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজিম
উদ্দিন গুটি কয়েক জামায়াত নেতার ইন্ধনে এলাকার সুনাম নষ্ট করছেন। বিদ্যালয়ের
শিক্ষার সুষ্টু পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে তার কারণে। তারা বলেন, শিক্ষকরা যেখানে মানুষ গড়ার কারিগর সেখানে নাজিম উদ্দিনের মত শিক্ষকের
কান্ডজ্ঞানহীন কাজ কারবারে হতাশ এলাকাবাসী
ও সচেতন মহল। তাছাড়া তিনি সরকারী নির্দেশ শুধু অমান্য করেন নি বরং তিনি রীতিমত
বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়েছেন। তারা এলাকার ও বিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে এবং
সরকারের নির্দেশ অমান্য করার কারণে নাজিম উদ্দিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করে
এই বিদ্যালয় থেকে তাকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার দাবী জানান।
এব্যাপারে জানতে বিদ্যালয়ের
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিনের মোবাইলে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা
হলেও তাকে পাওয়া যায় নি।
এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা
অফিসার মো. মুজিবুর রহমান বলেন, প্রকাশিত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সরকারী
পরিপত্রের সাথে অনেকটা সাংঘর্ষিক। এটা সংশোধন করে তা পুনরায় প্রকাশের জন্য
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেয়া হলেও তিনি তা না মেনে মূলত সরকারী
নির্দেশ অমান্য করলেন। আমরা সরকারী নির্দেশ অমান্য করার কারণে নিয়ম অনুযায়ী তার
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Post A Comment:
0 comments: