জনপ্রিয় অনলাইন : গৃহহারা রোহিঙ্গারা যেন তাদের ঘরে ফিরে যেতে পারে, এ জন্য
যুক্তরাজ্যকে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ এমপি রুশনারা
আলী। গত ৭ ডিসেম্বর, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনকে লেখা এক চিঠিতে তিনি
এই আহবান জানান।
রোহিঙ্গাদের কাছে পূর্ণ মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য মিয়ানমার
সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে যুক্তরাজ্যকে আহ্বান জানান ওই চিঠিতে রুশনারা আলী । ওই
চিঠিতে তিনি বলেন, ‘যে
সব রোহিঙ্গা গৃহহারা হয়েছে, তাদের জরুরি ভিত্তিতে সুরক্ষা দরকার।’ রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে সংঘটিত
সহিংস ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর এই নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।’ রোহিঙ্গাদের যেন আর মানবাধিকার
লঙ্ঘিত না হয়, সে জন্য জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন।
জাতিসংঘের উদ্ধৃতি দিয়ে এই ব্রিটিশ এমপি বলেন, ‘ত্রিশ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা গৃহহারা
হয়েছে। অনেকেই বাংলাদেশে ঢোকারজন্য সীমান্ত অতিক্রম করছে।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ধারণকৃত
কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, একাধিক রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়িয়ে ছারখার
করে দেওয়া হয়েছে। ইউএনএইচসিআরকে উদ্ধৃত করে তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা অপারেশন শুরু হওয়ার পর হাজার-হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে
যাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে মিয়ানমারের
অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হন। দুই দিনের মাথায়
১১ অক্টোবর মঙ্গলবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরও ১২ জনের মৃত্যুর কথা জানায়।
তারা দাবি করে, প্রায় ৩০০ মানুষ পিস্তল এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে সৈন্যদের ওপর আক্রমণ
করলে সেনাবাহিনী পাল্টা আক্রমণ করে। তখন থেকেই মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়ন অব্যাহত রয়েছে।
জাতিসংঘ যাকে ‘জাতিগত নিধন প্রক্রিয়া’ বলে রায় দিয়েছে। জাতিসংঘের হিসেবে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে সেখানে
৩০ হাজার মানুষ ঘর হারিয়েছে। পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন আরও হাজার হাজার মানুষ। তবে
রাজ্য থেকে পালিয়ে যেতে গিয়েও উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের বাধার মুখে পড়ছেন তারা। এবারের
সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যের মৃতের সংখ্যা ৮৬ জন বলে জানিয়েছে তারা। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা
আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। বেসরকারি হিসাবে, চলমান সহিংসতায় নিহত হয়েছেন অন্তত
৪০০ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে জানিয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত
২২ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ২০১২ সালে রাখাইনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায়
শতাধিক নিহতের পর এটিই সম্প্রতি সময়ে বড় ধরনের সহিংসতার ঘটনা।
Post A Comment:
0 comments: