জনপ্রিয় অনলাইন : খাদিজাকে খাবার দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, শিগগীরই এই মামলায় আদালতে চার্জশীট প্রদান করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
গত ৩ অক্টোবর ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের চাপাতির আঘাতে
সিলেটের কলেজ ছাত্রী খাদিজা গুরুত্বর জখম হলে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ওসমানী মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরদিন ৪ অক্টোবর তাকে আনা হয় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে। এ
ঘটনায় খাদিজার চাচা আব্দুল বাসেত বাদি হয়ে শাহপরান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। হত্যার
প্রচেষ্টার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে স্কয়ার হাসপাতালে
আসেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেটের শাহপরান থানার এসআই হারুনুর রশীদ। এ সময় তিনি
খাদিজার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। সকাল ১০ টায় স্কয়ার হাসপাতালে যান। তিনি সাংবাদিকদের
বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে তাকে প্রথমবারের মতো খাবার দেয়া হচ্ছে। আমি সকালে যখন তাকে
দেখতে যাই তখন তাকে পুডিং তরল করে খাওয়ানো হচ্ছিলো। পরে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তার
চিকিৎসার অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নেই। তার শরীরের ডান অংশ সঠিকভাবে নড়াচড়া করলেও বাম
অংশে এখনও অবশ রয়েছে। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা দেওয়া হলে শরীরের
বাম অংশ স্বাভাবিক হয়ে যাবে। হাসপাতাল সূত্র বলেছে, খাদিজার শরীরে ১০টি ক্ষত চিহ্ন
রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে প্রায় সব ক’টিই মারাত্মক। এরমধ্যে ৫ টি জখম খুবই গুরুতর। মাথা
ও হাতে এই আঘাতগুলো করা হয়েছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহের
প্রথম কার্য দিবসে খাদিজার উপর হামলাকারী বদরুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল
করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই মামলায় এ পর্যন্ত ৩০ জনের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাতজন
প্রতক্ষ্যদর্শী। তারা আদালতে সাক্ষীও দেবেন। সাক্ষীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এছাড়া
চার্জশীট তৈরির ক্ষেত্রেও খুবই সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
একটি সূত্র বলেছে, খাদিজার চার্জশীট প্রায় তৈরি করা হয়ে
গেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকায় এসেছেন খাদিজার চিকিৎসকদের বক্তব্য গ্রহণের জন্য।
ওই সূত্রটি বলেছে, এখন যদি স্কয়ার হাসপাতাল থেকে তার চিকিৎসা শুরু থেকে বর্ণনাসহ একটি
প্রতিবেদন দেওয়া হয় তাহলে এটি আদালতে দ্রুত দাখিল করা যাবে।
শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজালাল মুন্সি
সাংবাদিকদের বলেছেন, মামলাটি চাঞ্চল্যকর। পুলিশ খুব দ্রুত চার্জশিট দাখিল করবে বলে
তিনি উল্লেখ করেন। চার্জশীট দাখিলের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। আরো কিছু খুটিনাটি
বিষয় আছে। আমরা সেগুলো ভালো ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানায়।
খাদিজার চিকিৎসার ব্যয় ভার সরকার বহন করেছে। খাদিজার উপর
হামলাকারী বদরুলের বিচার দাবি জানিয়ে আসছেন সর্বস্তরের মানুষ। স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজাকে
দেখতে গিয়ে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী খাদিজার দ্রুতবিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।
গত ৩ অক্টোবর বিকেলে খাদিজাকে কুপিয়ে আহত করে শাহজালাল
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের
সহ-সম্পাদক বদরুল আলম। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রথম দফা অস্ত্রোপচারের পর অবস্থার অবনতি হলে রাতেই
তাকে রাজধানীর স্কোয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ৪ অক্টোবর বিকেলে খাদিজার মাথায় অস্ত্রোপচার
করেন চিকিৎসকেরা। ৯৬ ঘন্টা পরে চিকিৎসকরা জানায় তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। আরো উন্নতি
হলে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হবে। ৯ অক্টোবর তার শরীরে আরো একটি অস্ত্রোপচার করা হয়।
১৭ অক্টোবর হাতে অস্ত্রোপচার করা হয় খাদিজার। আস্তে আস্তে খাদিজা সুস্থ হয়ে উঠছে বলে
পরিবার ও হাসপাতাল সূত্র জানায়।
Post A Comment:
0 comments: