জনপ্রিয়
ডেস্ক : ব্যক্তিগত
গাড়িতে পুলিশ, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ সব ধরনের লেখা বা স্টিকার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ
করা হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই নিষেধাজ্ঞার
কথা জানানো হয়। সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগরের কমিশনার
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, অপরাধীরা সংবাদপত্র, পুলিশ এবং অ্যাডভোকেটের আলগা স্টিকার
ব্যবহার করে অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে। কাউকে হয়রানির জন্য নয়, মূলত অপরাধীরা যেন
অপরাধ করে অন্য কারো নাম ব্যবহার করে পালিয়ে যেতে না পারে, সে জন্যই এই ব্যবস্থা নেয়া
হচ্ছে। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন,ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সম্মানিত নাগরিককে উইদাউট
অ্যানি রিজন (কোনো কারণ ছাড়া) যদি হয়রানি করা হয়, তবে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর
ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি মনে করি, এগুলো লাগানো হয় হয়রানি না যাতে উল্টা পথে যাওয়া
যায়, ট্রাফিক রুল ভায়োলেশন (অমান্য) করা যায়, যাতে অন্যায় সুযোগ নেয়া যায়। মোস্ট অব
দ্য কেসে (অধিকাংশ ক্ষেত্রে) সেটাই হয়। এটা কিন্তু আমাদের মানতে হবে। প্রতিটি মহল্লায়,
প্রতিটি ওয়ার্ডে আমরা জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, পেশাজীবী, রাজনীতিবিদ এবং পুলিশের সমন্বয়ে
সার্ভেইলেন্স (নজরদারি) টিম গঠন করব। সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার লোকজনকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের
নাম যানবাহনের ওপর লিখে চলাচলের পরামর্শ দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগরীর প্রায়
৪০ লাখ ভাড়াটিয়ার তথ্য ডিএমপির কাছে এসেছে বলেও জানান আছাদুজ্জামান মিয়া। সাংসদ ও জাতীয়
সংসদ সচিবালয়-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য পাঁচ ধরনের নতুন স্টিকার গাড়িতে ব্যবহার করতে
হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, পুরোনো স্টিকারের পরিবর্তে সাংসদ ও তাদের
পরিবারের জন্য ব্যবহৃত গাড়িতে দুই ধরনের এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
ব্যক্তিগত গাড়িতে তিন ধরনের স্টিকার ব্যবহার করতে হবে। যানবাহনে হাইড্রলিক হর্ন ব্যবহার
করা যাবে না উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যানবাহনে হাইড্রলিক হর্ন ব্যবহার করার
বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। এ ধরনের হর্ন ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। হাইড্রলিক হর্ন
ব্যবহারের বিরুদ্ধে গত ২৪ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত বিশেষ অভিযানে ৪০৭টি মামলা ও ব্যবহৃত
হাইড্রলিক হর্নগুলো জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া গাড়িতে হুটার ও বিকন লাইট ব্যবহারের বিরুদ্ধে
অভিযান চলবে।’ রাজধানীতে উল্টো পথে যানবাহন চলতে
দেয়া হবে না জানিয়ে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, উল্টো পথে যেসব যানবাহন চলে, এগুলোর বড়
অংশ সমাজের কর্তাব্যক্তিদের গাড়ি। আমরা ট্রাফিক আইন মানতে অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছি।
রাস্তায় চলাচলের সময় পথচারী ও চালকদের মোবাইল ফোনে কথা বলার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে
বলে মন্তব্য করেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে
বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা ঘটে থাকে। এ ছাড়া মোটরসাইকেলের ট্রাফিক নিয়ম লঙ্ঘনের কারণে যানজট
সৃষ্টিসহ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। ২৪ এপ্রিল থেকে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে
বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন, মোটরসাইকেলে
দুজনের বেশি আরোহী ওঠা, হেলমেটবিহীন, উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে ২ মে পর্যন্ত
৯ হাজার ৮৫১টি মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য যানবাহনের বিরুদ্ধে ২১ হাজার ৪১৫টি
মামলা হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাস্তায় যত্রতত্র
পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত আছে। এ ছাড়া রিকশামুক্ত রাস্তায় রিকশা
চলাচল বন্ধ করতে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
Post A Comment:
0 comments: