সুফিয়ান আহমদ,বিয়ানীবাজার
প্রতিনিধিঃ আগামী ৪ঠা জুন ষষ্ট ধাপে বিয়ানীবাজারের ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্টিত
হবে নির্বাচন। দলীয় প্রতিকে প্রথম বারের মতো এ নির্বাচনে শুরু থেকেই ছিলো টানটান
উত্তেজনা। ছিলো নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হতে নানা দৌড়ঝাঁপ।
এসব দৌড়ে অনেকে দলীয়
চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে পারলেও ছিটকে গিয়ে অনেকেই হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী। যার
কারণে দলও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাদেরকে করেছে বহিষ্কার। তবে বহিষ্কারের এই
চিত্র ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগে দেখা গেলেও বিএনপিতে তেমন ছিলো না। এরপরও নির্বাচনকে
ঘিরে এবং প্রার্থী নির্বাচনে চমক ছিলো মাথিউরা ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নে বিএনপি’র প্রার্থী
নির্বাচনে ইউনিয়ন সভাপতি কছির আলী আব্দুর রব তৃণমূলের ভোটে নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি
যুক্তরাজ্য প্রবাসী জাকির হোসেন সুমনকে পরাজিত
করে দলীয় প্রতিক ধানের শীষ পেলেও তাকে চ্যালেঞ্জ করে কেন্দ্র থেকে দলীয়
প্রতিক নিয়ে আসেন জাকির হোসেন সুমন। যার কারণে বিএনপি’র প্রার্থী থেকে
বাদ পড়ে যান কছির আলী। এরপর তিনি সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা
করেন এবং আনারস প্রতিক নিয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতায় নামেন। আর তাকে
সমর্থন দিয়ে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি নজমুল হোসেন পুতুল তাঁর অনুসারীদের নিয়ে প্রচার প্রচারণায়
অংশ নিয়ে তাঁর পক্ষে ভোট চাইতে থাকেন। আর এতে করে স্থানীয় ভোটাররা “ বিএনপি’র প্রতিক আনারস” এমনটি বলে
করছেন রসিকতা।
অপরদিকে বিএনপি দলীয় প্রার্থী
জাকির হোসেন সুমনকে নিয়ে প্রচারণায় নামেন উপজেলা বিএনপি’র সহ সাধারণ
সম্পাদক সরোয়ার হোসেন। তিনি জাকিরকে নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন এবং জাকিরের ধানের
শীষে ভোট চাচ্ছেন। তাঁর সাথে প্রায় প্রতিদিন যোগ দিচ্ছেন স্থানীয় বিএনপি,ছাত্রদলসহ
উপজেলা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। যার কারণে বেকায়দায় পড়ে গেছে মাথিউরা ইউনিয়ন বিএনপি ও
এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক
ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা বলেন, মাথিউরা বিএনপিতে নির্বাচন আসার পর যে খেলা শুরু
হয়েছে,তাতে করে কোন ব্যক্তির নয় দলেরই ক্ষতি হচ্ছে। এর
সাথে দল বিরোধীরা এটিকে পুজি করে নানা ভাবে দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এতে
করে বরং দলেরই ক্ষতি হচ্ছে। তারা বলেন, আমরা আশা করি সকল
মতাবিরোধের উর্দ্ধে উঠে আমাদের উপজেলা সভাপতিসহ শীর্ষ নেতারা দলের পক্ষেই কাজ
করবেন।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে
উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি নজমুল
হোসেন পুতুল বলেন,
মাথিউরায় তৃণমুলের ভোটে বিএনপি’র চেয়ারম্যান
প্রার্থী নির্বাচিত হন ইউনিয়ন সভাপতি কছির আলী আব্দুর রব। আর তাকে চ্যালেঞ্জ করে
এবং তৃণমূল বিএনপি নেতাদের বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অসৎ উপায়ে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে
এসে যদি আর কেউ চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ইউনিয়নে প্রচার প্রচারণা চালান,তাহলে আমরা
তো তার পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারি না। তাই তৃণমূলকে সমর্থন করে তৃণমূলের
প্রার্থীর পক্ষে আমি কাজ করছি। দলের
বিরুদ্ধে নয়।
এবিষয়ে বিএনপি প্রার্থী জাকির
হোসেন সুমন বলেন,
আমাকে অত্যন্ত কম সময় দিয়ে উপজেলা বিএনপি সভাপতিসহ নীতি
নির্ধারকরা তৃণমূলে ভোটের ব্যবস্থা করলেন এবং তাদের মনোনীত প্রার্থীকেই তারা
বিএনপি’র চেয়ারম্যান
প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করলেন। যা সম্পূর্ণরুপে তাদের পরিকল্পিত। তিনি বলেন, আমি
দীর্ঘদিন থেকে বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত। প্রবাসে থেকে দলের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। যা
তৃণমূল নেতাকর্মী থেকে কেন্দ্রীয় নেতারাও অবগত। কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দ আমার
সম্পর্কে অবগত হয়ে এবং আমার জনপ্রিয়তা দেখে আমাকেই মাথিউরা ইউনিয়ন নির্বাচনে
বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতিক দিয়েছেন। আমি আশা করি, সুষ্টু
নির্বাচন হলে ধানের শীষ প্রতিকের জয়জয়কার হবে।
Post A Comment:
0 comments: