নোয়াখালী:
সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে যিনি দিনরাত ছুটে
চলেন এ গলি থেকে ও গলিতে সেই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবার নিজেই অসচেতনতার
পরিচয় দিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।
সম্প্রতি মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে তার নিজ এলাকার গ্রামের রাস্তায়
মোটরসাইকেলে চড়ে সদলবলে মহড়া দিতে দেখা গেছে। তবে বিপত্তিটা তৈরি হয়েছে
মোটরসাইকেলে চড়া নিয়ে নয়, মাথার হেলমেট নিয়ে। শোডাউনে
কারো মাথায়ই হেলমেল ছিল না। এমনকি স্বয়ং মন্ত্রীর মাথায়ও না। এ ঘটনার পর সোমবার
(২৩ মে) বাংলাদেশের প্রথম মোটরসাইকেল ব্লগ দাবিদার বাইক বিডি নামের একটি গ্রুপ
মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের রাস্তায় মোটরসাইকেলে হেলমেটবিহীন একটা ছবি পোস্ট
দিয়েছে। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ফেসবুকে বাইক বিডির প্রায় সাড়ে তিন লাখ
লাইক রয়েছে। এ ছবি পোস্ট করার পর থেকে অনেককেই বিভিন্ন কমেন্টস করতে দেখা গেছে।
এদিকে মন্ত্রীর ছবি পোস্ট করে বাইক বিডি লিখেছে, ‘মাননীয়
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব, কিছুদিন
আগে সংবাদমাধ্যমে জানতে পারলাম আপনি মহাসড়কে বাইক থামিয়ে বাইকারদের হেলমেট না
থাকার দরুন তাদের হেলমেট পড়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এই খবর শুনে আমাদের খুব ভালো
লাগলো, কারণ আমরা বাইক বিডি থেকে গত সাড়ে ৩ বছর ধরে
বাইকারদের মধ্যে হেলমেট ব্যবহার জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’ গ্রুপটি আরো লিখেছে, ‘কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে
সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার হেলমেটবিহীন বাইকারের সাথে বাইক যাত্রার ছবি দেখে আমরা খুব
মর্মাহত...’
আশা করি ভবিষ্যতে বাইকারদের হেলমেট ব্যবহারে উৎসাহিত করবেন এবং
এই ধরনের হেলমেটবিহীন বাইক যাত্রা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ রইলো...’ মন্ত্রীর হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল যাত্রার ছবি ফেসবুক থেকে সংগ্রহের কথা
উল্লেখ করেছে বাইক বিডি। এতে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। তাদের মধ্যে এমডি সাগর নামে
একজন মন্তব্য করেছে, ‘গ্রামের রাস্তা,
ইটস ওকে, বাট এট লিস্ট হেলমেট সঙ্গে
রাখা উচিত ছিলো।’
এমডি আতিকুর রহমান নামের আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রামের
রাস্তায় কয়জন হেলমেট পরে চালায়।’ সালমান আহম্মেদ নামে একজন
লিখেছেন, ‘এক্সিডেন্ট কি শুধু শহরের জন্য।’ তামিম
আল মাহির অর্ক নামে একজন ছবি পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘এই
জন্যেই কথায় বলে- “আগে নিজের চরকায় তেল দাও, পরে
অন্যেরে দিও।”
যাই হোক, আমাদের কথার সঙ্গে কাজের
সঙ্গতি অনেক ক্ষেত্রেই কম। আর তা কম বলেই আমাদের সার্বিক উন্নতি অগ্রগতির গতি
মন্থর। তবে বিশেষ ব্যক্তিবর্গের কথা আর কাজে সামঞ্জস্য না থাকলে তা যে সাধারণের
চোখ এড়ায় না সেটি আরো একবার প্রমাণ হলো। কেননা বিশেষদের বক্তব্যের উপর ভর করেই যে
সমাজ রাষ্ট্রের গতি-প্রকৃতি নির্ধারিত হয়। আর নীতি-নির্ধারকদের এমন হেয়ালি আমজনতার
কাছে অবশ্যই হয়তো কাম্য নয়। খাপছাড়াও বটে!
Post A Comment:
0 comments: