ঢাকা : কেন্দ্রীয়
কারাগারের কনডেম সেলে পূর্ণাঙ্গ রায় শোনার পর কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি মানবতাবিরোধী
অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী। রায় পড়ার সময়
নিজামী নির্বাক এবং স্বাভাবিক ছিলেন বলে জানা গেছে।
সোমবার (০৯ মে) রাত
সাড়ে ৮টায় কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে নিজামীকে ২২ পৃষ্ঠার রায়ের কপি পড়ে শোনান
কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির। এসময় পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি
গোলাম হায়দার, জেল সুপার নেসার আলম এবং দুইজন ডেপুটি জেল সুপার উপস্থিত ছিলেন।
রায় পড়ে শোনানো শেষে
সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির ও পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি গোলাম হায়দার অতিরিক্ত
কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. ইকবালের সঙ্গে দেখা করতে কারাগার থেকে বের হন বলেও সূত্র
জানায়। এখন যেকোনো সময় নিজামীর রায় কার্যকর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে কারা চিকিৎসক
ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস ও ডা. আহসান হাবি নিজামীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তিনি
সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে কারা সূত্র।
প্রসঙ্গত, নিয়ম অনুযায়ী
রায় পড়ে শোনানোর পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয়।
নিজামী ক্ষমা না চাইলে ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এর আগে সোমবার (০৯ মে)
একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান
নিজামীর রিভিউ খারিজের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রারের
দপ্তর থেকে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। রায় প্রকাশের পর সেটি ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে
কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি তার পরিবার বা আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং রাষ্ট্রপতির
কাছে ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে এখনো কিছু জানায়নি বলেও জানা যায়।
এদিকে নিজামীর দল জামায়াতের
পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে,
নিজামী তার স্বজনদের জানিয়েছেন, তিনি রাষ্ট্রপতির
কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইবেন না। আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে নিজামীকে ফাঁসির রশিতে ঝুলাতে এখন আইনগত
আর কোনো বাধা থাকবে না।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২
নভেম্বর (শনিবার) রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে মানবতাবিরোধী অপরাধে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা)
চৌধুরী আর আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। সাকা চৌধুরী বিএনপির
স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মুজাহিদ ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। এর আগে একই ধরনের
সাজা কার্যকর করা হয়েছিল জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা
ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের।
সর্বশেষ মানবতাবিরোধী
অপরাধের দায়ে ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলানোর আগে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আলী আহসান
মুজাহিদও রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাননি। যদিও তারা ক্ষমা চেয়েছিলেন বলে দাবি
সরকারের।
Post A Comment:
0 comments: