ঢাকা: মানবতাবিরোধী
অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, জামায়াতের আমির
মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকর করতে আট জল্লাদকে প্রস্তুত করেছে কারা
কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে রাজু ও সাত্তার নামের দু’জন আছেন, যারা
যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি
কার্যকর করেছেন।
তবে ওই সময় দায়িত্ব পালনকারী
প্রধান জল্লাদ শাহজাহান ও জনিকে এবার দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে না।
প্রাণ ভিক্ষার আবেদন এবং
পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতসহ আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে চকবাজারের পুরনো কেন্দ্রীয়
কারাগারেই নিজামীকে ফাঁসির মঞ্চে ঝোলানো হতে পারে। নির্ভরযোগ্য একাধিক কারা সূত্র
এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত রোববার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিজামীকে নিয়ে আসার পরই ফাঁসি কার্যকরের অনুষ্ঠানিক
প্রস্তুতি শুরু করে কারা কর্তৃপক্ষ। কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগার কমপ্লেক্সে ফাঁসি
কার্যকরের সম্ভাবনা তৈরি হলেও নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনায় পুরনো
মঞ্চই বেছে নেয়া হয়েছে।
সোমবার চকবাজারের কেন্দ্রীয়
কারাগারের ফাঁসির মঞ্চসহ আশপাশ পরিষ্কার করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে
জল্লাদ হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে এমন আটজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানায়
সূত্র।
সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আসাজ্জামান খাঁন কামাল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের জন্য কারা
কর্তৃপক্ষও প্রস্তুতি গ্রহন করেছে।
কারা সূত্র জানিয়েছে, এবার রাজু
ও সাত্তারই হচ্ছেন নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের প্রধান জল্লাদ। তালিকায় আছেন- আবুল,
হযরত, ইকবাল, মাসুদ,
মোক্তার ও মনি নামের আরও ছয় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি। তবে শেষ মুহূর্তে
দণ্ড কার্যকরের জল্লাদ চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।
দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে যারা
ফঁসি কার্যকর করেন,
তাদের জল্লাদ বলে। ফাঁসির আসামিকে জম টুপি পরিয়ে ফাঁসির মঞ্চে
নিয়ে গলায় দড়ি পরিয়ে দেয়া এবং পরে রুমাল ফেলে দেয়া নির্দেশনায় পায়ের নিচ থেকে
প্যাডেল সরিয়ে ফেলাই তাদের দায়িত্ব। এসব কাজের মাধ্যমে জল্লাদদের শাস্তিও কমে।
সোমবার রাতে কেন্দ্রীয়
কারাগারের কনডেম সেলে থাকা নিজামীকে ফাঁসির রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদন
খারিজ হওয়ার পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে শোনানো হয়েছে।
গত ৫ মে (বৃহস্পতিবার) আপিলের
রায়ের বিরুদ্ধে করা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে নিজামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ
বহাল রাখেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। এর আগে গত মঙ্গলবার রিভিউ শুনানি শেষে ৫ মে
রায়ের দিন ধার্য করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের
২৯ অক্টোবর নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
ট্রাইব্যুনালে নিজামীর বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৬টি অভিযোগের মধ্যে
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতাসহ আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয়
অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেপ্তার করার পর একই বছরের ২
আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
Post A Comment:
0 comments: