মোঃ কামরুজ্জামান, ফ্রান্স প্রতিনিধি : গত ৪ঠা  এপ্রিল ইউরোপে বসবাসকারী প্রায় ৮০ হাজার অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এ খবর খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বৈধ কাগজপত্র না থাকা ইউরোপে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা। ইউরোপে বৈধ কাগজ ছাড়া অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী পরিবার পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিন কাল যাপন করছেন। এই খবর প্রকাশের পর এই সকল প্রবাসীরা এক প্রকার হতাশা ও অনিশ্চিত  ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ।
   
বৈধ  কাগজ ছাড়া  এই সকল প্রবাসী বাংলাদেশীরা অনেকে অর্থের অভাবে, আবার কেউ কেউ শুধু মাত্র সঠিক তথ্যের অভাবে বৈধ  হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে বৈধতার পাবার সুযোগ তারা হাত ছাড়া করছেন। তাই বর্তমান সময়ে যাহারা এই অবস্থায় আছেন, তাদের প্রথম করণীয় হচ্ছে আইনজীবী বা  যারা বৈধতা পাবার সঠিক আইন কানুন বা নিয়ামাবলী জানেন তাদের পরামর্শ নেওয়া। ইউরোপের সব দেশেই ফ্রি আইনজীবীর পরামর্শ পাওয়া যায় বিধায়, আর্থিক সমস্যা থাকলেও আইনি সহয়তা পেতে কারোর কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।                    
ইউরোপে বৈধ কাগজ না থাকা প্র্রবাসীদের সমস্যা সমাধান কল্পে কার্যত কোন সংগঠন বা  রাজনৈতিকদলের কোন উদ্যোগ নেই। অনেক প্রবাসী এই প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইউরোপে বিভিন্ন সংগঠন এবং রাজনৈতিক দল প্রবাসীদের কল্যাণে মিটিং মিছিল করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। আসলে বাস্তবে এই সব সংগঠন বা দলের  ফলপ্রসু কোন কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায় না ।এছাড়া বেশ কিছু নাম সর্বস্ব সংগঠন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য বিভিন্ন সযোগ সুবিধা আদায়ে কাজ করবে বলে বিভিন্ন ফিরিস্তি সভা সেমিনারে তুলে ধরেন, বাস্তবে এই সব সংগঠনের কার্যক্রম সভা সেমিনার পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে ।অতীতের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায়, ইউরোপে বেশীর ভাগ বাংলাদেশী সহয়তা পেয়ে থাকেন নিকটাত্মীয় , বন্ধু  বান্ধব এবং কিছু মহৎ নিঃস্বার্থ  ব্যক্তিদের দ্বারা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশীদের চেয়ে ইউরোপিয়ানরা বেশী সহয়তা  করে থাকেন।               

ইইউ প্রতিনিধি দল অবৈধ বাংলাদেশীদের দেশে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দেওয়ার পর অনেকে ফেসবুকে  অবৈধ প্র্রবাসীদের বিভিন্ন বার্তা দিয়ে চিন্তিত না হতে পরামর্শ দিয়েছেন, এই সব  বার্তাকে অনেকে নাটক মঞ্চায়ন বলে অভিহিত করছেন । কেউ কেউ এই সব বার্তা দেখে বিরক্ত হয়ে মন্তব্য করেছেন এই সব কথাতে কি কারোর কল্যাণকর কিছু হবে ? কিছুই হবে না । ক্ষোভ প্রকাশের প্রমাণও যুক্তিসংগত কারণ, ইতিমধ্যে ইইউ ও তুরস্কের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী গ্রীস থেকে যেসব অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু হয়েছে তাদের মধ্যে অনেক বাংলাদেশীও রয়েছেন।    

বিবিসির সুত্রে জানা যায়, ইউরোপে অবৈধ এসব বাংলাদেশীকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়া এবং তাদের পুনর্বাসনে সহযোগিতা দেয়ার কথাও জানিয়েছে ইইউ। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তরা কি ধরণের সুযোগ সুবিধা পাবেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা না গেলেও, ইইউ যদি সত্যিই কোন সুযোগ সুবিধা প্রদান করেন, সেক্ষেত্রে প্রবাসীদের দাবী এই সুযোগ সুবিধা ইইউ যেন সরারি ক্ষতিগ্রস্তকে প্রদান করেন। আর তা না করে যদি বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে বণ্টন করা হয়, সেই ক্ষেত্রে খুবই সামান্য অংশই ক্ষতিগ্রস্তরা পাবেন বলে মনে করেন প্রবাসীরা।      

 ইউরোপের সব দেশেই কম বেশী বাংলাদেশী বাস করে থাকেন, তাই ইউরোপে যে সব দেশে বাংলাদেশীরা অবৈধ হয়ে পড়েছেন, সর্বোপুরি মানব কল্যাণে সহযোগিতা করার ইচ্ছা থাকলে সকল সংগঠন , রাজনৈতিক দল এমনকি ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে এই সমস্যা অনেকটা সমাধান করা সম্ভব , আর এর জন্য সকলের মহতি ইচ্ছা শক্তিই যথেষ্ট।   
Axact

Jonoprio

জনপ্রিয়২৪ একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বিশ্বজুড়ে রেমিডেন্স যোদ্ধাদের প্রবাস জীবন নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয় ২০০৩ সালে। স্পেনে বাংলাভাষী প্রবাসীদের প্রথম অনলাইন নিউজ পোর্টাল।.

Post A Comment:

0 comments: